অজিত গঙ্গোপাধ্যায়
অজিত গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা নাট্যজগতের এক স্বনামধন্য পুরুষ। জন্ম — কলিকাতায়, ২৮শে জুন, ১৯২১ ।
শিক্ষা
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় – অর্থনীতির ও গণিতের ছাত্র।
গভীর জীবনবোধ, কাব্যময় সংলাপ, তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ, বাস্তব মনস্তত্ত্বের চুলচেলা বিচার এঁর প্রত্যেক নাটকের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। তাঁর উল্লেখযোগ্য মৌলিক নাটক — নচিকেতা, মৃত্যু, পোষ্টমাস্টারের বৌ, সূর্যের মত সমুদ্র, এই সব স্বগোতক্তি ইত্যাদি। বিদেশী নাটক এবং উপন্যাস অনুসরণে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান — শকুন্তলা রায় (হেড্ডা গাবলার) নির্বোধ (ইডিয়ট), আকাশ বিহঙ্গী, (সীগার্ল) মালবাজারের মা মালতী, (ডি হাইলিশে ইয়োহান্না ডের সলাখট হফে), থানা থেকে আসছি (এ্যান ইন্সপেক্টর কলস) প্রমুখ। রবীন্দ্রনাথের ‘যে’ ও ‘ঘরে বাইরে’ এবং বঙ্কিমচন্দ্রের ‘মুচিরাম গুড়’-এর নাট্যরূপ তাঁর বিস্ময়কর কৃতিত্ব।
এই নাট্যকার কৃত শেক্সপীয়রের হ্যামলেট ও রিচার্ড দি থার্ড’ -এর বঙ্গানুবাদ বিশেষ সুপ্রসিদ্ধি পেয়েছে। অজিতবাবুর নাটক সম্বন্ধে বহু বিদ্বজন বিভিন্ন সময়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এঁর হ্যামলেটের বঙ্গানুবাদকে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ‘পাস্তেরনাকের’ রুশ ভাষায় অনুবাসের সঙ্গে সম তুলনা করেছেন। সাহিত্যিক প্রমথ নাশ বিশী বলেছেন— ‘ইব সেনের হেড্ডাগাবলার অজিতের হাতে হয়ে উঠেছে সার্থক রক্ত মাংসের শকুন্তরা রায়। নাট্যবিদ উৎপল দত্ত বলেছেন — ‘নাটকে সাহিত্য রস সঞ্চরিত করার কাজে অজিত ছিলেন বর্তমান নাট্যজগতে অনন্য। প্রতিটি বাক্যের ব্যাকরণগত সঠিকতার সঙ্গে যোজিত হত ধবনিগত মাধুর্য। যেমন — নচিকেতা নাটক, গ্রীক নাট্যশৈলীকে, খাঁটি দেশজ ভাবের বাহন করেছে নচিকেতা।” বহুরূপী থেকে রূপকার, এলটিজি থেকে নান্দীকার, চতুর্মুখ থেকে চতুরঙ্গ — প্রমুখ নাট্যসংস্থা এঁর বিবিধ নাটক মঞ্চে সফল উপস্থাপনা করেছে।
অজিতবাবুর অকাল প্রয়াণ (৫ জুলাই,১৯৮৪)। বাংলা নাট্যজগত এক দেদীপ্যমান জ্যোতিষ্ককে হারাল