Fiction

রহস্য যখন রক্তে

এই–এই যে পাঁচ। আর এই দ্যাখো, শেষ সাপটা টপকালাম। এবার দুই পড়লেই উঠে যাব। –দেখো, তবু আমিই জিতব। আমি আগে ওখানে পৌঁছে যাব। –আচ্ছা সোনা, ঠিক আছে, তুমি-ই জিতবে। তুমি সবসময় জিতবে। পিকুর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় জয়ন্ত।–এবার তোমার দান। পিকু মিনিট খানেক ধরে বেশ নেড়েচেড়ে দান ফেলে। ছক্কাটা টালমাটাল করে দুই এ এসে দাঁড়ায়। যাঃ, এক্কেবারে সাপের মুখে সাপটা আবার খেয়ে নিল।

Adventure & Thriller

রহস্য নিকেতন কপার-বীচেস [শার্লক হোমস]

শার্লক হোমস ছুঁড়ে ফেলে দিল ডেইলি টেলিগ্রাফের বিজ্ঞাপনের পাতাটা। বললে, ওয়াটসন, আমারকীর্তি নিয়ে তুমি যখনই গল্প লিখেছ, সেগুলো গল্পইহয়ে দাঁড়িয়েছে–রং চড়ানোর দিকে নজর না-দিয়ে যুক্তিবিজ্ঞানের দিকে বেশি নিষ্ঠা দেখালে ভালো করতে।

পান্না-মুকুটের আশ্চর্য অ্যাডভেঞ্চার [শার্লক হোমস]

হোমস, জানলা দিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটা বদ্ধ পাগল আসছে! ড্রেসিং গাউনের পকেটে হাত পুরে কুঁড়ের বাদশার মতো উঠে এল শার্লক হোমস। ফেব্রুয়ারি মাস। সবে সকাল হয়েছে। রাস্তায় গত রাতের বরফ রোদুরে ঝকঝক করছে। বেকার স্ট্রিট অবশ্য অনেকটা সাফ হয়ে এসেছে।

খানদানি আইবুড়োর কীর্তিকাহিনি [শার্লক হোমস]

লর্ড সেন্ট সাইমনের বিয়ে এবং তারপরেই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার অদ্ভুত কাহিনি অনেকের কাছেই এখন বাসি হয়ে গিয়েছে। নিত্যনতুন কলঙ্ক কাহিনি রটছে, চার বছর আগেকার ব্যাপারটা আর তেমন আগ্রহ জাগায় না। বিচিত্র এই রহস্য ভেদে কিন্তু শার্লক হোমসের একটা বড়ো ভূমিকা ছিল।

ইঞ্জিনিয়ারের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ নেই [শার্লক হোমস]

শার্লক হোমসের সমীপে দুটো কেস আমি নিজেই নিয়ে এসেছিলাম। একটা মি. হেথার্লির বুড়ো আঙুল সংক্রান্ত, আর একটা কর্নেল ওয়ার্বার্টনের পাগলামি। দুটির মধ্যে অনেক বেশি অদ্ভুত আর নাটকীয় ছিল প্রথমটা।

Non-Fiction

আপনমনে – রবি ঘোষ

বাঙালি-জীবন আর রসিকতা একসময়ে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও হাসির উপস্থিতি ভীষণভাবেই ছিল। বাংলা চলচ্চিত্রে সেই সবাক যুগের শুরু থেকেই (৩-এর দশক) ১৯৭০-৮০-র দশক অবধি ‘হাসি’ প্রাধান্য পেয়েই এসেছে—তৈরি হয়েছে ভালো ভালো হাসির ছবি।

ঘরোয়া

আমার প্রায়ই মনে পড়ে, সে অনেক দিনের কথা, রবিকাকার অনেক কাল আগেকার একটা ছড়া। তখন নীচে ছিল কাছারিঘর, সেখানে ছিল এক কর্মচারী, মহানন্দ নাম, সাদা চুল, সাদা লম্বা দাড়ি। তারই নামে তার সব বর্ণনা দিয়ে মুখে মুখে ছড়া তৈরি করে দিয়েছিলেন, সোমকা প্রায়ই সেটা আওড়াতেন—

জোড়াসাঁকোর ধারে

যত সুখের স্মৃতি এত দুঃখের স্মৃতি আমার মনের এই দুই তারে যা দিয়ে দিয়ে এইসব কথা আমার শ্রুতিধরই শ্রীমতী রানী চন্দ এই লেখায় ধরে নিয়েছেন, সুতরাং এর জন্যে যা কিছু পাওনা তাঁরই প্রাপ্য। মুখের কথা লেখার টানে ধরে রাখা সহজ নয়, প্রায় বাতাসে ফাঁদ পাতার মতও কঠিন ব্যাপার সুতরাং যদি কিছু দোষ থাকে এই বইখানিতে সেটা আমি নিতে রাজি হলেম ইতি

মরুতীর্থ হিংলাজ

[মরুতীর্থ হিংলাজ বাংলা ভাষায় রচিত একটি আত্মজৈবনিক কাহিনি। এটির রচয়িতা অবধূত তথা দুলালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। পাকিস্তানে বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত মরু এলাকা হিংলাজ’ হিন্দুদের একটি তীর্থস্থান; ৫১ শক্তিপীঠের এক পীঠ।

Biography

আলবার্ট আইনষ্টাইন

১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই মার্চ, তৎকালীন জার্মান সাম্রাজ্যের Württemberg রাজ্যের মিউনিখ শহর থেকে ১৩৪ কিলোমিটার দূরে উল্‌ম শহরের এক মধ্যবিত্ত ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আইনস্টাইনের বাবার নাম হেরমান আইনস্টাইন (Hermann Einstein) এবং মায়ের নাম পলিন আইনস্টাইন (Hermann Einstein)। তাঁর ছিলেন প্রকৌশলী।

অনিল ভৌমিক

প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক অনিল ভৌমিকের জন্ম হয় ১৯৩২ সালের ব্রিটিশ ভারতের বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। তাঁর বাল্যকাল এবং প্রথম যৌবন কেটেছিল ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর শহরে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গার সময় তিনি দেশত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন।

অনিল ঘড়াই

কথাশিল্পী অনিল ঘড়াই (১ নভেম্বর, ১৯৫৭—২৩ নভেম্বর, ২০১৪) ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের একজন বাঙ্গালী সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যে তার অবস্থান অনন্য। দলিত ও প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে সাহিত্যচর্চার সুবাদে তাকে অন্ত্যজ জীবনের রূপকার বলা হয়ে থাকে।

অনির্বাণ ঘোষ

কর্মসূত্রে লন্ডননিবাসী অনির্বাণ ঘোষ পেশায় সার্জন হলেও সাহিত্যের প্রতি তাঁর দুর্বলতা সেই ছোটো বয়স থেকেই। ২০১৫ সালে বন্ধু অরিজিৎ গাঙ্গুলির সঙ্গে তৈরি করেন নিজেদের ব্লগ anariminds.com। সেখানেই লেখালিখির সূত্রপাত। এরপর বেশ কিছু ছোটোগল্প, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনি আর প্রবন্ধ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাঠকের মন জয় করে নিতে শুরু করে।

Poem

জিঞ্জির (কাব্যগ্রন্থ)

অগ্র-পথিক হে সেনাদল, জোর কদম চল রে চল। রৌদ্রদগ্ধ মাটিমাখা শোন ভাইরা মোর, বসি বসুধায় নব অভিযান আজিকে তোর! রাখ তৈয়ার হাথেলিতে হাথিয়ার জোয়ান, হান রে নিশিত পাশুপতাস্ত্র অগ্নিবাণ!

ছায়ানট (কাব্যগ্রন্থ)

ওই ঘাসের ফুলে মটরশুটির ক্ষেতে আমার এ-মন-মৌমাছি ভাই উঠেছে আজ মেতে। ওই রোদ-সোহাগী পউষ-প্রাতে অথির প্রজাপতির সাথে বেড়াই কুঁড়ির পাতে পাতে পুষ্পল মৌ খেতে।

চিত্তনামা (কাব্যগ্রন্থ)

খোলো মা দুয়ার খোলো প্রভাতেই সন্ধ্যা হল দুপুরেই ডুবল দিবাকর গো। সমরে শয়ান ওই সুত তোর বিশ্বজয়ী কাঁদনের উঠছে তুফান ঝড় গো॥ সবারে বিলিয়ে সুধা,

চক্রবাক (কাব্যগ্রন্থ)

মোর অপরাধ শুধু মনে থাক! আমি হাসি, তার আগুনে আমারই অন্তর হোক পুড়ে খাক! অপরাধ শুধু মনে থাক!

Blog

নীল তিমি || সাগরের বিষ্ময়

শরীর যতই বড় হোক না কেন নীল তিমির খাবার কিন্তু ছোট প্রাণীরাই। কাঁকড়া, গলদা চিংড়ি, ক্রেফিশ ও বিভিন্ন ক্রিল জাতীয় জীব এদের প্রধান খাবার। একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমি দিনে গড়ে প্রায় ৮ টন ক্রিল খেতে পারে। ক্ষুধা লাগলে ৩ হাজার ৬০০ কেজি পর্যন্ত খাবার গ্রহন করে তারা।

আরাগোসোরাস: একটি প্রাচীন জীবাশ্ম || ডাইনোপিডিয়া || ৪র্থ পর্ব

Aragosaurus গণের ডাইনোসর বিশেষ। এই নামের অর্থ হলো― আরাগনের টিকটিকি (Aragon Lizard=Aragón + Gr. sauros "lizard")। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে এর নামকরণ করেছিলেন সাঞ্জ (Sanz), বুসকালিওনি (Buscalioni), ক্যাস্যানোভাস (Casanovi) এবং সান্টাফে (Santafe)। স্পেনের আর্গন প্রদেশে এর জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল বলে, এর এরূপ নামকরণ করা হয়েছিল।

বত্রিশ সিংহাসন: একটি ভারতীয় লোককাহিনী

বত্রিশ সিংহাসন বা সিংহাসন বত্তিসি ভারতীয় লোককাহিনীর একটি সংগ্রহ। " বত্রিশ সিংহাসন " শিরোনামের আক্ষরিক অর্থ "সিংহাসনের ৩২ গল্প"। গল্পে, রাজা ভোজ ১১ শতকে কিংবদন্তি প্রাচীন রাজা বিক্রমাদিত্যের সিংহাসন আবিষ্কার করেন। সিংহাসনে ৩২ টি পুতুল থাকলেও বাস্তবে তারা অপ্সরা।

আংগাটুরামা ডাইনোসর: একটি প্রাচীন প্রাণীর গল্প || ডাইনোপিডিয়া || ৩য় পর্ব

ডাইনোসর সম্পর্কে আমরা সবাই শুনেছি। এগুলি পৃথিবীতে প্রাচীন সময়ে থেকেই বাস করতে থাকে। এই ডাইনোসরগুলির মধ্যে আংগাটুরামা ডাইনোসরও একটি অন্যতম স্পেশাল প্রজাতি। আংগাটুরামা ডাইনোসর বিশেষত দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলে পাওয়া যায়।

Story

ক্ষীরের পুতুল

এক রাজার দুই রানী, দুও আর সুও। রাজবাড়িতে সুওরানীর বড়ো আদর, বড়ো যত্ন। সুওরানী সাতমহল বাড়িতে থাকেন। সাতশো দাসী তাঁর সেবা করে, পা ধোয়ায়, আলতা পরায়, চুল বাঁধে। সাত মালঞ্চের সাত সাজি ফুল, সেই ফুলে সুওরানী মালা গাঁথেন। সাত সিন্দুক-ভরা সাত-রাজার-ধন মানিকের গহনা, সেই গহনা অঙ্গে পরেন। সুওরানী রাজার প্রাণ।

জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল (গল্পগ্রন্থ)

‘মাগো! তুমি এত মজা করে কথা বলতে পারো! তারপর? মেয়েটা তোমাকে কি বলল?’ বুলার হাসি আর থামে না, স্বামীর প্রাক্-বিবাহ প্রেমের গল্প শোনে আর হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে, খিলখিল এবং থিকথিক আওয়াজ বন্ধ হবার পরেও গোলগাল ফর্সা মুখের এ-কোণে ও-কোণে হাসির কুচি চিকচিক করে। উৎসাহে জাহাঙ্গীরের ঠোঁট উপচে পড়ে, আমাকে বলে পুরুষ মানুষ, তার বড়ি হবে পুরুষ মানুষের মতো। হেঁটে গেলে মাটি কাঁপবে।’

দোজখের ওম (গল্পগ্রন্থ)

বাবা রমিজালী মিঞা, পত্রে শত ২ দোয়া জানিবা পর সমাচার এই যে প্রায় মাসাধিককাল তুমার কুনরূপ সোম্বাদ না পাইয়া দুচ্চিন্তিত আছি। সোমাচার ইহা জানিবা যে তুমার ভইন অছিমুন্নেছা গত সমবার দিবাগত রাত্রে পোকের অউসুদ খাইয়া মরিয়া গিয়াছে 1 দারগা পুলিশে একুনে ৩ তিন টাকা কম ২৫০ টাকা খরচ হইয়া গিয়াছে।

দুধ ভাতে উৎপাত (গল্পগ্রন্থ)

‘ও মা এখনো দাঁড়িয়ে আছিস!’ এর পরও মিলি দাঁড়িয়ে রইলো। জানলা বন্ধ করার জন্যে অনেকক্ষণ থেকে তার ডান হাত জানলার বাঁদিকের পাল্লায় রাখা, আরেকটা হাত জানলার শিকে। দুটো হাতই ভিজে যাচ্ছে, পানির ঝাপ্টা এসে পড়ছে চুলে ও মুখে।

Novel

রহু চণ্ডালের হাড়

শারিবার যখন বছর বারো বয়স, তখন নানি লুবিনির সঙ্গে তার সখ্য গভীরতর হয়। কেননা তখন শারিবা সব বুঝতে শিখেছে, নিজের এবং নিজের লোকজনের চতুষ্পার্শ দেখতে শিখেছে। আর সেই সঙ্গে নানির কাছে শুনে শুনে বর্তমানের সাথে অতীতের যোগসূত্র রচনা করার চেষ্টাও সে করতে পারে তার অপুষ্ট বুদ্ধিতে।

রাধারমণ

যে-দেশে একটি ব্রহ্মাস্ত্রের দ্বারা অপর ব্রহ্মাস্ত্রকে প্রশমিত করা হয়, সেই দেশ জুড়ে কোথাও আগামী দ্বাদশ বর্ষ পর্যন্ত বৃষ্টি হবে না। সৌপ্তিকপর্বের শেষে মহর্ষি ব্যাসদেব অশ্বত্থামাকে এই কথাটুকু স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। শিবিরের মশালগুলি এখনও প্রজ্বলিত। নিকষ অন্ধকারের তীব্রতা কাটিয়ে ভোর হবে একটু পরেই।

বুড়ো আংলা

উত্তর থেকে বড়নদী দেখানে ব্রহ্মপুত্রের জলে এসে মিলেছে ঠিক সেই বাঁকের মুখেই কতকালের পুরানো ডিমরুয়ার আসামী রাজা আড়িমাওয়ের নাটবাড়ি। নাটবাড়ির নিচেই নদী মজে গিয়ে মস্ত চর পড়েছে। এত কাল থেকে হাড়গিলে পাখিরা এই চর দখল করে আছে যে, ক্রমে চরটার নামই হয়ে গেছে হাড়গিলার চর।

খোয়াবনামা (আনন্দ পুরস্কারপ্রাপ্ত)

পায়ের পাতা কাদায় একটুখানি গেঁথে যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গলার রগ টানটান করে যতোটা পারে উঁচুতে তাকিয়ে গাঢ় ছাই রঙের মেঘ তাড়াতে তমিজের বাপ কালো কুচকুচে হাত দুটো নাড়ছিলো, ঐ জায়গাটা ভালো করে খেয়াল করা দরকার। অনেকদিন আগে, তখন তমিজের বাপ তো তমিজের বাপ, তার বাপেরও জন্ম হয় নি,