Post Image

২৩ তম উপাখ্যান || বত্রিশ সিংহাসন || ভারতীয় লোককাহিনী


আর এক পুতুল বলল, মহারাজ, আমার চিত্রলেখা। রাজা বিক্রমাদিত্য কেমন গুণের অধিকারী ছিলেন শুনুন।

একবার রাজা বিক্রমাদিত্য পৃথিবী ভ্রমণ শেষ করে রাজধানীতে ফিরে এলে সুহৃদ এবং রাজ্যের প্রজাদের খুব আনন্দ হল!

প্রাসাদে প্রবেশ করে স্নান সেরে, ভাল কাপড় পরে তিনি মন্দিরে প্রবেশ করলেন। ষোড়শোপচারে আৰ্চনা করে স্তব করলেন।

‘হে দেবাদিদেব, তুমি আমার পিতামাতা, তুমিই বন্ধু, তুমিই সখা, তুমিই বিদ্যা, তুমিই ধন – তুমিই আমার সর্বস্ব।

এই বলে স্তব শেষ করে দেবাদিদেবকে প্রণাম করে ব্ৰাহ্মণদের গাভী, ভূমি ও তিল দান করে দীন, অন্ধ, বধির, কুব্জ, পঙ্গু সকলকে দানে তুষ্ট করে খাবার ঘরে প্রবেশ করে বালক, বালিকা, বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের খাইয়ে শেষে বন্ধুদের সঙ্গে নিজে খেতে বসলেন।

সব কাজ শেষ করে রাত্রে তিনি শুতে গেলেন। শেষ রাতে স্বপ্ন দেখলেন - মোষের পিঠে করে তিনি দক্ষিণ দিকে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখেই তিনি বিষ্ণুকে স্মরণ করে বিছানা ত্যাগ করলেন। পরদিন সিংহাসনে বসে উপস্থিত ব্রাহ্মণদের স্বপ্ন-বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন।

স্বপ্ন-বৃত্তান্ত শুনে ব্রাহ্মণরা বললেন, রাজন, স্বপ্ন দুই প্রকারের হয়। কতকগুলি শুভফলপ্রদ, আর কতকগুলি অনিষ্টকর। হাতির পিঠে চড়া, বাড়ির উপরে ওঠা, কান্না, শাখ, মৃত্যু, ব্রাহ্মণ, গঙ্গা, সোনা দর্শন সৌভাগ্যের কারণ হয়।

কিন্তু স্বপ্নে মোষ, গাধা, শূকর, বাঁদর, কাঁটাগাছ, ছাই এসব দেখা খুব খারাপ। যাই হোক, এই স্বপ্ন আপনার পক্ষে অশুভ।

রাজা বললেন, এর প্রতিবিধান কি?

তাঁরা বললেন, আপনি স্নান করে যজ্ঞদর্শন করে অলঙ্কার, বস্ত্র ব্রাহ্মণদের দান করুন। তারপর নতুন কাপড় পরে দেবার্চনা করুন ও ব্রাহ্মণদের আবার গাভী, ধান প্রভৃতি দশ রকম দ্রব্য দান করুন এবং অন্ধ, বধির, পঙ্গু, অনাথ সবাইকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দান করে তাদের তুষ্ট করুন। এর ফলে আপনার অমঙ্গল কেটে যাবে।

রাজা ব্রাহ্মণদের কথামত অনুষ্ঠান করে তিন দিন পর্যাপ্ত দানের জন্য কোষাগার উন্মুক্ত রাখার হুকুম দিলেন।

গল্প শেষ করে পুতুল রাজাকে ঐরুপ দানশীল কিনা জানতে চাইলেন।

রাজা নিরুত্তর রইলেন।

Chapters

EiAmi.com