৩২তম উপাখ্যান || বত্রিশ সিংহাসন || ভারতীয় লোককাহিনী

পরদিন রাজা ভোজরাজ সিংহাসনে বসতে গেলে শেয পুতুলটি বললো, হে রাজন, আমার নাম উন্মাদিনী, এই সিংহাসনে একমাত্র বিক্রমাদিতাই বসবার যোগ্য। তাঁর তুল্য রাজা এই পৃথিবীতে আর একজনও নেই। তিনি কাঠের খড়্গ নিয়ে সারা পৃথিবী জয় করে একচ্ছত্র রাজা হয়েছিলেন। তিনি সমস্ত রাজাদের পরাজিত করে, দরিদ্রদের অকাতরে দান করে দারিদ্রমোচন করেছিলেন।

হে রাজন, আপনি তো শুনলেন রাজা বিক্রমাদিত্যের সকল গুণের কথা। যদি এই সব , গুণ আপনার থাকে তবে অবশ্যই সিংহাসনে বসুন।

ভোজরাজ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন। বত্রিশটি পুতুল এবার সমস্বরে ভোজরাজকে বললো, হে রাজন, আপনিও সামান্য একজন রাজা নন, আপনার মত পবিত্র চরিত্র, কলাবিশারদ, ঔদার্য গুণসম্পন্ন রাজা বর্তমানে আর কেউ নেই। আপনার অনুগ্রহে আমাদের পাপ ক্ষয় হল। আমরা শাপমুক্ত হলাম।

আমরা বত্রিশজন পাৰ্বতীর সখী ছিলাম। আমরা দেবীর অত্যন্ত স্নেহের পাত্রী ছিলাম।

একদিন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি আমাদের অভিশাপ দিলেন, তোরা নিজীব পুতুল হয়ে দেবরাজ ইন্দ্রের সিংহাসনের শোভা বৃদ্ধি কর গিয়ে। আমরা তখন তাঁকে ভক্তিসহকারে প্রণাম করে এই শাপের অবসানের জন্য প্রার্থনা করলাম। তখন দেবী বললেন, সেই সিংহাসনে একসময় রাজা বিক্রমাদিত্য বসবেন। তারপর রাজা ভোজরাজ ঐ সিংহাসনে বসতে গেলে তোদের মুখ থেকে রাজা বিক্রমাদিতোর অশেষ গুণ ও দয়াশীলতার কথা শুনবে এবং তখনই তোদের শাপের অবসান হবে।

এরপর ভোজরাজের অনুমতি নিয়ে পুতুলরা চলে গেল।

ভোজরাজা আর সিংহাসনে বসলেন না। ঐ সিংহাসনের উপর শিব-পার্বতীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে রোজ পূজা করতে লাগলেন এবং বিক্রমদিত্যের আদর্শ অনুসরণ করে রাজ্য শাসন করতে লাগলেন।

||কথা শেষ||

Chapters