ক্ষীরের পুতুল

এক রাজার দুই রানী, দুও আর সুও। রাজবাড়িতে সুওরানীর বড়ো আদর, বড়ো যত্ন। সুওরানী সাতমহল বাড়িতে থাকেন। সাতশো দাসী তাঁর সেবা করে, পা ধোয়ায়, আলতা পরায়, চুল বাঁধে। সাত মালঞ্চের সাত সাজি ফুল, সেই ফুলে সুওরানী মালা গাঁথেন। সাত সিন্দুক-ভরা সাত-রাজার-ধন মানিকের গহনা, সেই গহনা অঙ্গে পরেন। সুওরানী রাজার প্রাণ।

জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল (গল্পগ্রন্থ)

‘মাগো! তুমি এত মজা করে কথা বলতে পারো! তারপর? মেয়েটা তোমাকে কি বলল?’ বুলার হাসি আর থামে না, স্বামীর প্রাক্-বিবাহ প্রেমের গল্প শোনে আর হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে, খিলখিল এবং থিকথিক আওয়াজ বন্ধ হবার পরেও গোলগাল ফর্সা মুখের এ-কোণে ও-কোণে হাসির কুচি চিকচিক করে। উৎসাহে জাহাঙ্গীরের ঠোঁট উপচে পড়ে, আমাকে বলে পুরুষ মানুষ, তার বড়ি হবে পুরুষ মানুষের মতো। হেঁটে গেলে মাটি কাঁপবে।’

দোজখের ওম (গল্পগ্রন্থ)

বাবা রমিজালী মিঞা, পত্রে শত ২ দোয়া জানিবা পর সমাচার এই যে প্রায় মাসাধিককাল তুমার কুনরূপ সোম্বাদ না পাইয়া দুচ্চিন্তিত আছি। সোমাচার ইহা জানিবা যে তুমার ভইন অছিমুন্নেছা গত সমবার দিবাগত রাত্রে পোকের অউসুদ খাইয়া মরিয়া গিয়াছে 1 দারগা পুলিশে একুনে ৩ তিন টাকা কম ২৫০ টাকা খরচ হইয়া গিয়াছে।

দুধ ভাতে উৎপাত (গল্পগ্রন্থ)

‘ও মা এখনো দাঁড়িয়ে আছিস!’ এর পরও মিলি দাঁড়িয়ে রইলো। জানলা বন্ধ করার জন্যে অনেকক্ষণ থেকে তার ডান হাত জানলার বাঁদিকের পাল্লায় রাখা, আরেকটা হাত জানলার শিকে। দুটো হাতই ভিজে যাচ্ছে, পানির ঝাপ্টা এসে পড়ছে চুলে ও মুখে।

খোঁয়ারি (গল্পগ্রন্থ)

অনেকক্ষণ ধরে কড়া নাড়ার পর ওপরতলা থেকে জবাব আসে, ‘আসি!’ তারপর আবার কোনো সাড়া-শব্দ নেই; গেটের ওপর মাধবীলতার ঝাড়ে চরে বেড়ায় পোকামাকড়, তাদের চলাচলের ধ্বনি ছাড়া এ বাড়ির কোনো স্পন্দন বোঝা যায় না। মাধবীলতায় ঢাকা উঁচু গেট তেমন চওড়া নয়।

অন্য ঘরে অন্য স্বর (গল্পগ্রন্থ)

এই মনোরম মনোটোনাস শহরে অনেকদিন পর আজ সুন্দর বৃষ্টি হলো। রাত এগারোটা পার হয় হয়, এখনো রাস্তার রিকশা চলছে ছল ছল করে যেনো গোটিয়ার বিলে কেউ নৌকা বাইছে, ‘তাড়াতাড়ি করো বাহে, ঢাকার গাড়ি বুঝি ছাড়ি যায়।’ আমার জানলায় রোদন-রূপসী বৃষ্টির মাতাল মিউজক, পাতাবাহারের ভিজে গন্ধভরা সারি, বিষাদবর্ণ দেওয়াল; অনেকদিন পর আজ আমার ভারি ভালো লাগছে।

আতঙ্ক একাদশ

আশিস আর রজতাভ’র কলেজ লাইফের বন্ধুত্বটা সপরিবারে বেড়ানোর ফলে আরও পোক্ত হয়েছে। ফলে দুই মিসেসও যেমন বন্ধু হয়ে গেছেন, পুপু আর তার বুবুনদাদাও পিঠোপিঠি খেলার সঙ্গী। এবারে গোয়া এসে সারাদিন হুটোপাটির পর সন্ধেবেলা, যখন বাবা মায়েরা সান্ধ্য আড্ডার আসর জমালেন, তখনও দু’জনে লাফাতে লাফাতে পাশের হলটায় দৌড়োল খেলবে বলে।

হায়রোগ্লিফের দেশে

‘আচ্ছা, বলো দেখি মিশরের রাজধানী কী ছিল?’ ‘ছিল মানে কী? আছে তো, কায়রো।’ ‘সে তো এখন, কায়রো শহরের বয়স মাত্র ১০০০ বছর।’ ‘মাত্র বলছেন? আমাদের কলকাতার বয়স ৪০০ বছর, এটাকে মাত্র বলা যায়।’

৩২তম উপাখ্যান || বত্রিশ সিংহাসন || ভারতীয় লোককাহিনী

পরদিন রাজা ভোজরাজ সিংহাসনে বসতে গেলে শেয পুতুলটি বললো, হে রাজন, আমার নাম উন্মাদিনী, এই সিংহাসনে একমাত্র বিক্রমাদিতাই বসবার যোগ্য। তাঁর তুল্য রাজা এই পৃথিবীতে আর একজনও নেই। তিনি কাঠের খড়্গ নিয়ে সারা পৃথিবী জয় করে একচ্ছত্র রাজা হয়েছিলেন।

৩১তম উপাখ্যান || বত্রিশ সিংহাসন || ভারতীয় লোককাহিনী

হিমালয়ের দক্ষিণ দিকে বিন্ধ্যবতী নামে এক সুন্দর নগরী আছে। সেখানকার রাজার নাম সুবিচারক। তাঁর পুত্রের নাম ময়সেন। একদিন ময়সেন শিকার করতে বেরিয়ে একটি হরিণকে দেখতে পেয়ে তাকে অনুসরণ করে এক গভীর বনে প্রবেশ করলেন। যা হোক, একটা পথ খুঁজে পেয়ে যখন একাকী চলছিলেন তখন একটা নদী দেখলেন। সেই নদীর