অনিল ভৌমিক

প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক অনিল ভৌমিকের জন্ম হয় ১৯৩২ সালের ব্রিটিশ ভারতের বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। তাঁর বাল্যকাল এবং প্রথম যৌবন কেটেছিল ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর শহরে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গার সময় তিনি দেশত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাকাউনটেন্ট জেনারেল অফিসে পেশাগত জীবন শুরু করেন। এরপর তিনি এই চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতার পেশা গ্রহন করেন। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলে এমএ বিটি। তিনি আকাশবাণীতে বিখ্যাত লেখকদের গল্প উপন্যাসের বেতার নাট্যরূপ লিখেছেন। 'পরাশর রায়' এই ছদ্মনামে তিনি আকাশবাণীর তালিকাভুক্ত গীতিকার।
 
কিশোর বয়সে 'পাঠশালা' পত্রিকায় প্রথম তাঁর 'সে' গল্পটি প্রকাশিত হয়। শিক্ষকতার সময়ে তিনি ছাত্রদের কাছে বলতে শুরু করেন দুঃসাহসী ফ্রান্সিস এবং তার বন্ধুদের গল্প। ছাত্রদের আগ্রহ দেখে তিনি এই গল্পগুলি লেখার পরিকল্পনা করেন। 'শুকতারা' পত্রিকার অন্যতম কর্ণধার ক্ষীরোদ চন্দ্র মজুমদারকে একটি পরিচ্ছেদ লিখে পড়তে দেওয়ার পরে তিনি খুশি হন এবং উৎসাহ দান করেন। এরপর তিনি প্রথম ফ্রান্সিসের কাহিনী 'সোনার ঘন্টা' সমাপ্ত করেন। এটি শুকতারা পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। এর পরের ফ্রান্সিস কাহিনী 'হীরের পাহাড়'ও শুকতারাতেই প্রকাশিত হয়। এর পরের কাহিনীগুলি প্রকাশে সবথেকে বেশি উৎসাহ দেন 'উজ্জ্বল সাহিত্য মন্দির' প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার কিরীটিকুমার পাল। তিনি ফ্রান্সিসের কাহিনী ছাড়াও আরো কিছু কাহিনী রচনা করেছেন। পরাশর রায় ছদ্মনামে শুকতারায় তার রচিত ত্রয়ী সত্যসন্ধানীর কাহিনী প্রকাশিত হয়।
 
তাঁর বিখ্যাত রচনাগুলির মধ্যে আছে সোনার ঘন্টা, হীরের পাহাড়, মুক্তোর সমুদ্র, তুষারে গুপ্তধন, রূপোর নদী, বিষাক্ত উপত্যকা, মনিমানিক্যের জাহাজ, সোনার শেকল, সর্পদেবীর গুহা প্রভৃতি।