পাঁচটা কমলা-বিচির ভয়ংকর কাহিনি [শার্লক হোমস]

১৮৮২ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যে শার্লক হোমস যেসব রহস্য সমাধানের ভার হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটিতে তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা চূড়ান্তভাবে প্রকাশের সুযোগ পায়, কয়েকটিতে তার ক্ষমতা থই পায়নি–অমীমাংসিত থেকে গিয়েছে।

বসকোম ভ্যালির প্রহেলিকা [শার্লক হোমস]

শার্লক হোমসের টেলিগ্রামটা এল সকাল বেলা–আমি তখন স্ত্রীকে নিয়ে প্রাতরাশ খেতে বসেছি। দিন দুয়েকের জন্য বসকোম ভ্যালি যাবে? এইমাত্র টেলিগ্রাম পেলাম। তলব পড়েছে। প্যাডিংটন থেকে সওয়া এগারোটায় গাড়ি আছে।

ছদ্মবেশীর ছলনা [শার্লক হোমস]

বেকার স্ট্রিটের আস্তানায় বসে আছি আমি আর হোমস। সামনে আগুনের চুল্লি। হোমস বললে, ভায়া, কল্পনার রং কখনো বাস্তবের রঙের চেয়ে জোরদার হতে পারে না। আটপৌরে নাটক নভেল মাঠে মারা যাবে যদি জীবন থেকে তুলে নেওয়া সত্য ঘটনাকে সঠিকভাবে দেখা যায়।

লাল-চুলো সংঘ [শার্লক হোমস]

গত বছর শার্লক হোমসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম শরৎকালে। লাল-চুলো মোটাসোটা এক ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলছিল হোমস। শুধু লালই নয়। আগুনের মতোই জ্বলজ্বলে চুলের বাহার দেখবার মতো।

বোহেমিয়ার কুৎসা-কাহিনি [শার্লক হোমস]

শার্লক হোমসের চোখে তিনিই নাকি একমাত্র মহিলা পদবাচ্য স্ত্রীলোক। তার মানে এই নয় যে মেয়েটির প্রতি দুর্বলতা ছিল হোমসের। মন যার ঘড়ির কাটার মতো সুসংযত, কোনো ভাবাবেগ সেখানে ঠাঁই পায় না।

জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল (গল্পগ্রন্থ)

‘মাগো! তুমি এত মজা করে কথা বলতে পারো! তারপর? মেয়েটা তোমাকে কি বলল?’ বুলার হাসি আর থামে না, স্বামীর প্রাক্-বিবাহ প্রেমের গল্প শোনে আর হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে, খিলখিল এবং থিকথিক আওয়াজ বন্ধ হবার পরেও গোলগাল ফর্সা মুখের এ-কোণে ও-কোণে হাসির কুচি চিকচিক করে। উৎসাহে জাহাঙ্গীরের ঠোঁট উপচে পড়ে, আমাকে বলে পুরুষ মানুষ, তার বড়ি হবে পুরুষ মানুষের মতো। হেঁটে গেলে মাটি কাঁপবে।’

দোজখের ওম (গল্পগ্রন্থ)

বাবা রমিজালী মিঞা, পত্রে শত ২ দোয়া জানিবা পর সমাচার এই যে প্রায় মাসাধিককাল তুমার কুনরূপ সোম্বাদ না পাইয়া দুচ্চিন্তিত আছি। সোমাচার ইহা জানিবা যে তুমার ভইন অছিমুন্নেছা গত সমবার দিবাগত রাত্রে পোকের অউসুদ খাইয়া মরিয়া গিয়াছে 1 দারগা পুলিশে একুনে ৩ তিন টাকা কম ২৫০ টাকা খরচ হইয়া গিয়াছে।

দুধ ভাতে উৎপাত (গল্পগ্রন্থ)

‘ও মা এখনো দাঁড়িয়ে আছিস!’ এর পরও মিলি দাঁড়িয়ে রইলো। জানলা বন্ধ করার জন্যে অনেকক্ষণ থেকে তার ডান হাত জানলার বাঁদিকের পাল্লায় রাখা, আরেকটা হাত জানলার শিকে। দুটো হাতই ভিজে যাচ্ছে, পানির ঝাপ্টা এসে পড়ছে চুলে ও মুখে।

খোঁয়ারি (গল্পগ্রন্থ)

অনেকক্ষণ ধরে কড়া নাড়ার পর ওপরতলা থেকে জবাব আসে, ‘আসি!’ তারপর আবার কোনো সাড়া-শব্দ নেই; গেটের ওপর মাধবীলতার ঝাড়ে চরে বেড়ায় পোকামাকড়, তাদের চলাচলের ধ্বনি ছাড়া এ বাড়ির কোনো স্পন্দন বোঝা যায় না। মাধবীলতায় ঢাকা উঁচু গেট তেমন চওড়া নয়।

অন্য ঘরে অন্য স্বর (গল্পগ্রন্থ)

এই মনোরম মনোটোনাস শহরে অনেকদিন পর আজ সুন্দর বৃষ্টি হলো। রাত এগারোটা পার হয় হয়, এখনো রাস্তার রিকশা চলছে ছল ছল করে যেনো গোটিয়ার বিলে কেউ নৌকা বাইছে, ‘তাড়াতাড়ি করো বাহে, ঢাকার গাড়ি বুঝি ছাড়ি যায়।’ আমার জানলায় রোদন-রূপসী বৃষ্টির মাতাল মিউজক, পাতাবাহারের ভিজে গন্ধভরা সারি, বিষাদবর্ণ দেওয়াল; অনেকদিন পর আজ আমার ভারি ভালো লাগছে।